সারা বিশ্বে তেল–চিনির দাম কমেছে,আর বাংলাদেশে বেড়েছে ! - SHOMOY TV USA

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Wednesday, April 8, 2020

সারা বিশ্বে তেল–চিনির দাম কমেছে,আর বাংলাদেশে বেড়েছে !



বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কমেছে। এতে অবশ্য খুশি হওয়ার কারণ নেই। কেননা, দেশের বাজারে পণ্য দুটির দাম বেড়েছে।


একে তো সরকার গত বাজেটে কর বাড়িয়ে তেল ও চিনির দাম বাড়িয়েছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব রুখতে সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার আগে আতঙ্কের কেনাকাটায় দাম আরেক দফা বেড়েছে।
বিশ্ববাজারে দাম কমার তথ্য পাওয়া যায় পণ্যমূল্য নিয়ে বিশ্বব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদনে। এবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য বিদায় নেওয়া মার্চ মাসে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের গড় দাম দাঁড়িয়েছে টনপ্রতি ৭৪৮ মার্কিন ডলার, যা জানুয়ারির তুলনায় প্রায় ১২৮ ডলার কম। এ হিসাবে সয়াবিনের লিটারে খরচ কম পড়তে পারে প্রায় প্রায় ১১ টাকা।

একইভাবে জানুয়ারিতে যে পাম তেল টনপ্রতি ৮১০ ডলার ছিল, সেটা এখন ১৭৫ ডলার কমে ৬৩৫ ডলারে নেমেছে। দাম কমেছে লিটারে প্রায় ১৫ টাকা।

চিনির দামও পড়তি। জানুয়ারিতে চিনির দাম বেড়ে টনপ্রতি ৩১০ ডলারে উঠেছিল। এখন সেটা কমে ২৬০ ডলারে নেমেছে। কেজিতে কমেছে ৪ টাকার বেশি।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এখন বাজারে এক লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৯৩ থেকে ৯৭ টাকা, এক মাস আগে যা ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা ছিল। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, যা ছিল ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা। আরেকটু পেছনে তাকালে দেখা যাবে, দাম আরও বেশ কম ছিল।

বাজেট ঘোষণার আগে গত জুনে প্রতি কেজি চিনি ৫২ থেকে ৫৪ টাকা ছিল। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ছিল ১০০ টাকার নিচে, যা এখন ১০৮ থেকে ১১০ টাকা।
বিশ্ববাজারে জানুয়ারি পর্যন্ত আগের কয়েক মাসে তেল–চিনির দাম বাড়তি ছিল। এতে বাজারেও দাম বেড়ে যায়। ডিসেম্বরের শেষ দিকে বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটারে ৮ টাকার মতো বাড়িয়ে দেয় বিপণনকারী কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে প্যাকেটজাত চিনির দাম বাড়ানো হয় কেজিতে ৬ টাকার মতো। আর খোলা তেল ও চিনির দাম ওঠা–নামা করেছে চাহিদা ও সরবরাহের ওপর।

বিপণনকারী কোম্পানিগুলো পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেলে খুচরা বিক্রেতাদের ৩০ থেকে ৫০ টাকা লাভের সুযোগ দেয়। এর মানে হলো, খুচরা বিক্রেতারা যে দরে তেল কেনেন, তার সঙ্গে বোতলে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের (এমআরপি) পার্থক্য থাকে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। ঢাকার বড় বাজার ও বড় দোকানে পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেলে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যেত। আতঙ্কের কেনাকাটার সময় কোনো ছাড় পাওয়া যায়নি। এখনো সয়াবিন তেল মোড়কে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ৫৩০ থেকে ৫৫০ টাকা দিয়েই কিনতে হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে প্রায় ১৪ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে, যা প্রায় পুরোটাই আমদানি করে মেটানো হয়। দেশে উৎপাদিত হয় ৬০ হাজার টনের মতো।

চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে অপরিশোধিত চিনির টনপ্রতি আমদানি শুল্ক ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়। আবার নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ৩০ শতাংশ। এ ছাড়া আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ করে অগ্রিম কর (এটি) ও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আরোপ করা হয়। তখন আমদানিকারকেরা জানিয়েছিলেন, চিনিতে মোট করভার বাড়বে ৫ টাকা। একই ভাবে ভোজ্যতেলের ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) তিন স্তরে আরোপ করা হয়। এতে ৩ টাকার মতো কর বাড়ে।

কোম্পানিগুলোর হিসাবে এক কেজি চিনিতে এখন কর দাঁড়ায় ২৪ টাকার মতো। আর তেলে তা ১৮ থেকে ২০ টাকা।

তেল ও চিনির ওপর কর কমানোর সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৭ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছিল। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাজেটে বাড়তি কর তেল-চিনির দাম বাড়ার একটি কারণ। পবিত্র রমজান মাসে তেল-চিনির সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখতে তারা এ সুপারিশ করছে। অবশ্য এনবিআর এ সুপারিশে সাড়া দেয়নি।

খোলা ভোজ্যতেল ও চিনির বাজারদর পাইকারি বাজারে লেনদেনের মাধ্যমে ঠিক হয়। বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কমেছে। দেশের পাইকারি বাজারও কমতি। কিন্তু সমস্যা হলো, মৌলভীবাজারে পাইকারি ভোজ্যতেল-চিনি কেনাবেচা এখন বন্ধ। প্রতিযোগিতা যদি না থাকে দাম কমবে কীভাবে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বড় লোকসানের মুখে আছি। আর খুচরায় দাম চড়া। আমি নিজেও পাঁচ কেজি চিনি কিনেছি ৭০ টাকা কেজি দরে।’

জানতে চাইলে বাণিজ্যসচিব মো. জাফর উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যে পাইকারি ভোজ্যতেল-চিনি বেচাকেনা বন্ধ থাকার কথা নয়। আমি বিষয়টি দেখছি।’ বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে দাম না কমার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখন যা বিক্রি হচ্ছে, তা আগে আমদানি করা হতে পারে। আমরা পর্যালোচনা করব।’

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‌‘বিশ্ববাজারে দাম যখন বাড়ে, আমাদের দেশে তখন সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায়। আর যখন বিশ্ববাজারে কমে, তখন সুফল পাওয়া যায় খুব দেরিতে। যখন বিক্রেতাদের যেটা সুবিধা, তারা সেটাই করে।’

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here