ঢাকায় খাবার পাচ্ছে না দুই লাখ কুকুর - SHOMOY TV USA

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Wednesday, April 8, 2020

ঢাকায় খাবার পাচ্ছে না দুই লাখ কুকুর



মেগাসিটি রাজধানী ঢাকার দুই সিটিতে প্রতিদিন অভুক্ত থাকছে প্রায় দুই লাখ কুকুর। সারা দেশে চলছে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। সরকারের নির্দেশে বন্ধ রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হোটেল-রেস্টুরেন্ট। মহানগরীর বেশির ভাগ বাসিন্দা ঘরবন্দী। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাহিরে যাচ্ছেন না। রাজধানীর অলি গলিতে থাকা কুকুরগুলো বাসা-বাড়ি এবং হোটেল থেকে ফেলা উচ্ছিষ্ট খেয়ে জীবন ধারণ করত। বর্তমানে হোটেল বন্ধ থাকায় এসব কুকুরের অনাহারে দিন কাটছে। ফলে হিংস্র হয়ে উঠছে এসব প্রাণী। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহানগরীর সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে না এলে অভুক্ত এসব বেওয়ারিশ কুকুর পথে পথে মরে থাকতে পারে। দেখা দিতে পরিবেশ বিপর্যয়ের মতো বিষয়। মোহাম্মদপুরের বিজলী মহল্লার বাসিন্দা আমিন হাওলাদার বলেন, গতকাল সকালে খাবার কিনে ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে বাসায় ফিরছিলাম। বাসার কাছাকাছি যেতেই কয়েকটি কুকুর সামনে এসে ঘেউ ঘেউ ও চেঁচামেচি করতে থাকে। পাশের দোকান থেকে রুটি কিনে কুকুরগুলোকে খেতে দেই। খাবার দেখে হুমড়ি খেয়ে পড়ে কুকুরগুলো। দুই সিটি করপোরেশনের হিসাব মতে, রাজধানীতে রয়েছে প্রায় দুই লাখ বেওয়ারিশ কুকুর। পোষা কুকুর রয়েছে প্রায় ছয় হাজার। এসব কুকুর হোটেল ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন স্পটের উন্মুক্ত ময়লা থেকে খাবার খেয়ে বেঁচে থাকে। তবে রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া মহল্লার কয়েকজন তরুণ কিছু অভুক্ত কুকুরকে খাবার দিচ্ছে। বিরাট একটি অংশ রয়ে গেছে অভুক্তের তালিকায়। এ বিষয়ে গতকাল পিপলস ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান স্থপতি রাকিবুল হক এমিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, সারা দেশ এখন অবরুদ্ধ। তাই রাজধানীসহ দেশের মালিকবিহীন প্রাণীদের প্রতি মানবিক আচরণ করুন এবং মন্ত্রণালয় থেকে খাবার সংস্থানেরও অনুরোধ করেছেন তিনি।

গতকাল গুলশান-২ থেকে গুলশান-১ নম্বরের দিকে মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন নতুনবাজার এলাকার ফাস্ট ফুড দোকানের মালিক আবদুস সাত্তার সুমন ও তার বন্ধু আনোয়ার হোসেন। তাদের কাছে ছিল পাউরুটি ও বিস্কুট। আজাদ মসজিদের কাছে পৌঁছলে তারা দেখতে পান ৫-৬টি কুকুর ফুটপাথে দাঁড়িয়ে আছে। ওই স্থানে পৌঁছানো মাত্রই দুটি কুকুর চেঁচামেচি শুরু করে। আবদুর সাত্তার জানান, পরে হাতে থাকা পাউরুটি দিয়ে রক্ষা পান তারা। এমন চিত্র রাজধানীর সর্বত্র। অভুক্ত বেওয়ারিশ কুকুরের দল খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছে মহানগরীতে। পাড়া-মহল্লা, পার্ক-খেলার মাঠ, সড়ক-ফুটপাথ সর্বত্র অভুক্ত বেওয়ারিশ কুকুরের আনাগোনা। যত্রতত্র সময়-অসময়ে ক্ষুধার জ্বালায় কুকুরের হাক ডাক দিন দিন বাড়ছে। ফলে এসব অভুক্ত কুকুর নগরবাসীর মাঝে এখন বড় চিন্তার বিষয় হয়ে উঠেছে। রাজধানীর অনেক এলাকায় যানবাহন চলাচল না করায় অভুক্ত বেওয়ারিশ কুকুর এখন খাবারের সন্ধানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। ঢাকা দক্ষিণ সিটির স্বাস্থ্য বিভাগের ভেটেরিনারি সার্জন এবং ১০ জন জনবলের সমন্বয়ে একটি টিম রয়েছে। পাশাপাশি উত্তর সিটিতে রয়েছে ভেটেরিনারি সার্জনের নেতৃত্বে আরেকটি টিম। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক অফিস আদেশের মাধ্যমে কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। এরপর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কুকুর নিধন বন্ধ করে দেয়। এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শক্রমে নিধন না করে বন্ধ্যাকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বেসরকারি পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা অভয়ারণ্যকে। চুক্তির মেয়াদ শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) অভয়ারণ্যের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেনি। এখন নিজস্ব উদ্যোগে বন্ধ্যাকরণ করছে দায়িত্বপ্রাপ্ত এ সংস্থা। অন্যদিকে অভয়ারণ্যের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ নবায়ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।


স/নাজ/ঢাকা/০০১

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here